সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৫৫ পূর্বাহ্ন
মোঃ নাসির উদ্দিন, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর গলাচিপায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হস্তক্ষেপে একটি বাল্য বিবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড বড় গাবুয়া গ্রামে। বুধবার (১০ মে) দুপুর ২টা ৩০ মিনিটের সময় এ বিবাহ বন্ধ করা হয়।
কনে হচ্ছেন বড় গাবুয়া গ্রামের হারুন সরদারের মেয়ে। আর বর হচ্ছেন বরগুণা জেলার আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের মুন্সীর হাট এলাকার বাসিন্দা। এ ঘটনায় বর ও কনের অভিভাবকদের মোট ৩২ (বত্রিশ) হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ দুপুরে গোলখালী ইউনিয়নের একটি বাড়িতে বিয়ের আয়োজন করা হয়। কনের বয়স ১৪ বছর। সে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার দূরত্বে তার মাদরাসা। তার শ্রেণি রোল নম্বর ৭।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সকাল থেকেই কনের বাড়িতে রান্না বান্না চলছিল। বিয়ের আয়োজনের অংশ সামিয়ানা টাঙানো হয়। উৎসবের পরিবেশ বিরাজ করছিলো বাড়িতে। বিষয়টি জানতে পেরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. গোলাম মোস্তফা, গোলখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন হাওলাদার, বাল্য বিবাহ নিয়ে কাজ করে সুশীলন এনজিও প্রতিনধি, পুলিশ ও আনসার নিয়ে বিয়ে বাড়িতে হাজির হন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় জাল জন্মনিবন্ধন দেখিয়ে বিয়ের সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
পরে বর ও কনের পিতাকে বাল্য বিবাহের সহযোগিতা ও সম্পাদনা করার জন্য বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ এর সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী মোট ৩২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া ওই ছাত্রী প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেয়া হবে না, এই মর্মে বর ও কনের অভিভাবকদের নিকট হতে মুচলেকা নেয়া হয়। এ বিষয়ে গোলখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন হাওলাদার বলেন, আমার ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে বাল্য বিবাহের খবর জানতে পেরে আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়কে অবহিত করি এবং বিয়ে বাড়িতে গিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দেই। আমার ইউনিয়নে কোন বাল্য বিবাহ, মাদক, নারী নির্যাতন ইত্যাদি ঘৃণিত কার্যক্রম বন্ধে আমরা বদ্ধ পরিকর। কেউ এরকম অপরাধ করলে রেহাই পাবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল বলেন, বাল্য বিবাহ বেআইনি। এতে অসংখ্য মেধাবী শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবনের ইতি ঘটে। বাল্য বিবাহ হচ্ছে মাতৃমৃত্যু, নারী নির্যাতন ইত্যাদির প্রধান অনুঘটক। বাল্য বিবাহের খবর পেয়ে ওই গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে বিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। বাল্য বিবাহের শিকার শিক্ষার্থীর পড়াশোনা চালিয়ে নিতে উদ্যোগ নেয়া হবে।